নুরের চারাগাছ থেকে বটবৃক্ষ

charagach-noor

জান্নাতুন নুর সাইমুম। পড়ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিউটের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং(চিত্রকলা) বিভাগে। পড়াশোনার পাশাপাশি কাঠের উপর আঁকা অলংকার এবং সুঁই-সুতোর যাদুতে তৈরি গহনা, হ্যান্ডপেইন্টেড কুর্তি, টিশার্ট এবং মিউজিক ইন্সট্রুমেন্ট ইত্যাদি নিয়ে গড়ে তুলেছেন প্রতিষ্ঠান ‘চারাগাছ’। সেসব নিয়ে তার সাথে কথা বলেছেন মাহবুব এ রহমান ।

 

মাহবুবঃ চারাগাছের শুরুটা কখন, কীভাবে?
সাইমুমঃ চারাগাছের শুরুটা ছিলো ২০১৯ এর ফেব্রুয়ারিতে। খুব বেশি কিছু ভেবে শুরু করিনি কাজটা, আসলে আমার বন্ধুবান্ধব রা প্রায়ই আমাকে বলতো। সেজন্যই মূলত আমি কাজগুলো শুরু করার চিন্তাভাবনা করি ছোট পরিসরে। একদিন আমি আর আমার এক বন্ধু কয়েক সেকেন্ডের প্ল্যানে আমরা ক্লাস থেকে মার্কেটে যাই আর কিছু জিনিসপত্র কিনে আনি, এটাই ছিলো চারাগাছের শুরুর প্রথম ধাপ।

মাহবুবঃ চারাগাছ নাম দেওয়ার পেছনের গল্পটা কী?
সাইমুমঃ চারাগাছ নামের ভাবনাটা আসলে আসে এমনভাবে যে আমার মনে হয় আমার পুরাটা কাজ একটা চারাগাছ যেটা একদিন বৃক্ষে পরিণত হবে আর প্রতিটা কাজের অংশ একেকটা ছোট ছোট পাতা যা খুব জীবন্ত।

মাহবুবঃ শুরুতে কোনো বাঁধার মুখে পড়েছিলেন বা কারো থেকে অনুপ্রেরণিত হয়েছিলেন?
সাইমুমঃ তেমন একটা বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়নি, প্রথম প্রথম যেহেতু আমি খুব একটা প্ল্যান করে সব শুরু করিনি তাইপুঁজি সংকট ছিলো, তবে সময় যেতে যেতে আমি অনেক সাড়া পেয়েছি যার কারণে এই সমস্যাটা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছি।

মাহবুবঃ কখনও কী এমন মনে হয়েছে আমাকে যে, আমাকে দিয়ে হবেনা?
সাইমুমঃ আমাকে দিয়ে হবেনা এটা আমার কখনও মনে হয়নি। হ্যাঁ, এটা ঠিক প্রথম প্রথম কাজের যা প্রেশার ছিলো সেটা আমার একা করা একটু কষ্টদায়ক ছিলো। রেগুলার ক্লাস করে, কাজ রেডি করা একটু প্রেশার তো ছিলোই তবে আস্তে আস্তে আমি একটা রুটিনের ভেতর চলে আসি।

মাহবুবঃ চারাগাছে কী কী পণ্য তৈরি করেন?
সাইমুমঃ মূলত চারাগাছের যাত্রা শুরু হয় কাঠের উপর আঁকা অলংকার দিয়ে, এরপর ধীরে ধীরে সুই সুতোর কাজ করা গহনা, হ্যান্ডপেইন্টেড কুর্তি/ টিশার্ট/মিউজিক ইন্সট্রুমেন্ট এসব যুক্ত হয়। তবে চারাগাছের এখনও প্রধান আকর্ষন হাতে আঁকা অলংকারই।

মাহবুবঃ পণ্য ডেলিভারি করেন কীভাবে?
সাইমুমঃ চট্টগ্রামের ভেতর আমাদের পিকআপ পয়েন্ট টা চারুকলায়, ওখানেই ডেলিভারি দেয়া হয় যা আমি নিজেই দেই। আর চট্টগ্রামের বাইরে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জেলাতেই কুরিয়ারের মাধ্যমে পণ্য পৌঁছানো হয়।

মাহবুবঃ যদি চারাগাছের কিছু অর্জনের গল্প বলতে বলি…
সাইমুমঃ অর্জনের গল্প অনেকগুলো হতে পারে আমার জন্যে। যেমন এতো এতো মানুষের ভালোবাসা পাওয়া। আমি প্রথমে ভাবিনি আমি এত সাড়া পাবো আর ভালোবাসা পাব সবার থেকে।আমার পরিবার এবং আমার বন্ধুবান্ধব আমাকে এই যাত্রায় প্রচুর সাহায্য করেছে এবং করছে এটা অবশ্যই আমার একটা অর্জন।

মাহবুবঃ ভবিষ্যতে চারাগাছকে ঠিক কোন উচ্চতায় দেখতে চান?
সাইমুমঃ ভবিষ্যতে চারাগাছ কে মানুষের সর্বোচ্চ নির্ভরতা আর ভালোবাসার জায়গায় দেখতে চাই। নান্দনিক আর রুচিসম্মত ডিজাইনের মাধ্যমে চারাগাছকে সর্বোচ্চ উচ্চতায় নিতে চাই। ওইযে প্রথমেই বললাম আমি চাই চারাগাছ একদিন বৃক্ষে পরিণত হোক।

নুরের চারাগাছ থেকে বটবৃক্ষ

মাইন্ড শেপার : মনের ডাক্তার

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *